Skip to main content

সাবেক খতিয়ান ও হাল খতিয়ান


টাকার হিসাব রাখার জন্য ব্যাংকে যেমন একটি একাউন্ট নম্বর থাকে ঠিক তেমনি জমিরও একটি একাউন্ট নম্বর থাকে। একে খতিয়ান নম্বর বলে। একটি জরিপে কোন একটি দাগ এক বা একাধিক একাউন্টে (খতিয়ানে) অন্তর্ভুক্ত থাকে। পরবর্তী জরিপে সেই দাগটি অন্য একটি নতুন একাউন্টে (খতিয়ানে) অন্তর্ভুক্ত হয়। এক্ষেত্রে, পূর্বের একাউন্ট নম্বরকে সাবেক খতিয়ান এবং বর্তমান একাউন্ট নম্বরকে হাল খতিয়ান বলে। একটু জটিল মনে হচ্ছে। ধরি, এসএ রেকর্ডে মোঃ রহিম উদ্দিন এর একটি একাউন্ট (খতিয়ান নম্বর) ছিল যার নম্বর ২০১। এই একাউন্টে ৬৭, ১০৩ ও ৩০৪ এই তিনটি জমির খণ্ড (দাগ নম্বর) ছিল। তিনি এক সময় তার মালিকানার এই তিনটি দাগের জমি বিক্রি করে দেন। ৬৭ ও ১০৩ দাগের জমি বিক্রি করেন জামাল মিয়ার নিকট এবং ৩০৪ দাগের সকল জমি বিক্রি করেন হোসেন মিয়ার নিকট। পরবর্তীতে বিআরএস রেকর্ডে এসএ ৬৭ এবং ১০৩ দাগটির নতুন পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) ১০৫ ও ৪০৫ হয়। তখন জামাল মিয়ার নামে ৩০৮ নম্বর একাউন্ট (খতিয়ান) খোলা হয় এবং সেই একাউন্টে বিআরএস ১০৫ ও ৪০৫ দাগের জমি অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে ৩০৮ হলো হাল খতিয়ান এবং ২০১ হলো সাবেক খতিয়ান। আবার, এসএ ৩০৪ দাগটি বিআরএস রেকর্ডে নতুন পরিচিতি নম্বর ৫০৭ (দাগ নম্বর) পায় এবং সেটি জামাল মিয়ার নামে ২৫৬ নং একাউন্টে (খতিয়ানে) অন্তর্ভুক্ত হয়। এক্ষেত্রে ২৫৬ হলো হাল খতিয়ান এবং ২০১ হলো সাবেক খতিয়ান।

Comments

Popular posts from this blog

জমির হিস্যা বা অংশ

জমির হিস্যা ভালভাবে বুঝার পূর্বে খতিয়ান, মালিক, দাগ ও জমির পরিমাণ বলতে কি বুঝায় তা ভালভাবে বুঝতে হবে। ধরি, একটি ব্যাংক একাউন্টে ১০০০০ টাকা আছে এবং সেই একাউন্টের একজন মালিক। তাহলে সেই ১০০০০ টাকার মালিক ঐ একজন ব্যক্তি। কিন্তু যদি একাউন্টের মালিক হন ৪ জন এবং সবাই যদি ঐ একাউন্টের মোট টাকার ২৫% এর মালিক হন তাহলে ৪ জন মালিকের প্রতি জন ২৫০০ টাকার মালিক। এ বিষয়টিকে আমরা টাকার হিস্যা বলতে পারি। ঠিক তেমনি একটি খতিয়ানে জমির হিস্যা বলতে বুঝায় ঐ খতিয়ানে যে কয়জন মালিক আছেন তাদের প্রত্যেকে ঐ খতিয়ানে মোট যে পরিমাণ জমি আছে তার কতটুকু জমির মালিক। ধরি একটি খতিয়ানে ১ জন মালিক- রহিম মিয়া। তাহলে রহিম মিয়া একা ঐ খতিয়ানের সকল জমির মালিক। কিন্তু যদি কোন খতিয়ানে ৪ জন মালিক থাকেন তাহলে প্রত্যেকের নামের পাশে তিনি কত ভাগ জমির মালিক তা লেখা থাকবে। একে জমির হিস্যা বলে। এবার বিষয়টিকে আরেকটু জটিল করা যাক। ধরি, একটি খতিয়ানে ৪ জন মালিক এবং রহিম উদ্দিন একজন মালিক। ঐ খতিয়ানে ১টি মাত্র দাগ এবং ঐ দাগে মোট জমির পরিমাণ ২০ শতাংশ। ধরি, রহিমের নামের পাশে জমির হিস্যার অংশে ০.৪০০ লিখা আছে। তাহলে রহিম ঐ দাগে ২০x০.৪০০= ৮ শতাংশ জমির...

জমির শ্রেণী

কোন এলাকার সব জমি এক কাজে ব্যবহৃত হয় না। কৃষি, বাড়ি, দোকান, কবরস্থান, মন্দির, মসজিদ, পুকুর, খাল, বিল, ঈদগাহ, শ্মশান, রেললাইন, রাস্তা ইত্যাদি কাজে জমি ব্যবহৃত হয়। কোন জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। কোথাও থাকে নদী, কোথাও থাকে হালট আবার কোথাও জঙ্গল। এভাবে কোন খতিয়ানে কোন জমির দাগের পাশে সেই জমির শ্রেণী লেখা থাকে। জমির শ্র্রেণী হতে বোঝা যায় যে এটি কোন ধরণের জমি। এতক্ষণ যে ধরণের জমির কথা বলা হয়েছে তা সবার কাছেই পরিচিত। কিন্তু ভূমি জরিপে এমন কিছু জমির শ্রেণী আছে বা জমির শ্রেণী হিসেবে এমন কিছু শব্দ আছে যা হয়ত সবার কাছে পরিচিত নয়। উদাহরণস্বরূপ- নামা, কান্দা, নাল, হালট, গোপাট, নয়নজুলি, পাগাড় ইত্যাদি। এসব সম্পর্কে পরবর্তীতে জানা যাবে। তবে একটি বিষয় জেনে রাখা ভাল। সকল জমি ব্যক্তি মালিকানায় থাকে না; কিছু জমি সরকারি মালিকানায় থাকে। আবার কিছু জমি জনসাধারণ ব্যবহার করেন; যেমন- রাস্তা, খাল, বিল, নালা, হালট, গোপাট ইত্যাদি। নিচের খতিয়ানে জমির সকল দাগের জমির শ্রেণী নামা।

সাবেক দাগ ও হাল দাগ

জরিপের প্রধান কাজ হলো একটি মৌজার মৌজা ম্যাপ তৈরি করা। পূর্বেই বলা হয়েছে মৌজা ম্যাপে অসংখ্য ভূমি খণ্ড আঁকা থাকে এবং এসব ভূমি খন্ডের একটি দাগ নম্বর দেয়া হয়। সাধারণত একটি জরিপের অনেক বছর পর অপর একটি জরিপ পরিচালিত হয়। এত বছরের ব্যবধানে এবং জমির মালিকানা বদলের কারণে অথবা অন্যান্য কারণে জমির খণ্ড বা দাগসমূহের আকার/আকৃতি বা জমির পরিমাণ পরিবর্তিত হয়; আবার কখনও আকার/আকৃতি অপরিবর্তিত থেকে যায়। কখনও কখনও দেখা যায় যে পূর্ববর্তী জরিপের একটি বড় খন্ডের জমি (দাগ) পরবর্তী জরিপে ভেঙ্গে একাধিক খন্ডে (দাগে) পরিণত হয়। তখন নতুন জরিপে এই নতুন জমির খণ্ডগুলোকে চেনার জন্য পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) দেয়া হয়। ধরি, নেত্রকোণা জেলায় ১৯৬০-১৯৬২ সালে পরিচালিত এসএ জরিপে সাতপাই মৌজার একটি দাগ নম্বর ছিল ১০৩ এবং সেই দাগে জমির পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ। ১৯৮০-১৯৮২ সালে নেত্রকোণা জেলায় পরিচালিত বিআরএস জরিপে সাতপাই মৌজার ১০৩ দাগটি ভেঙ্গে ৩টি খন্ডে পরিণত হয়েছে। এই তিনটি খণ্ডকে চেনার জন্য ২০৪, ২০৫ ও ২০৬ পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, বিআরএস ২০৪, ২০৫ ও ২০৬ দাগ তিনটি এসএ ১০৩ দাগ হতে এসেছে। এক্ষেত্রে বিআরএস...