Skip to main content

Posts

মৌজা

এতক্ষণ যে রসুলপুরের গল্প বললাম সেই রসুলপুরকে ভূমির ভাষায় মৌজা বলে। এটি পায়ে পড়ার মোজা না। তাহলে দেখা গেল রসুলপুর গ্রাম হয়ে গেল মৌজা আর এই মৌজা কে কিছু জমির খন্ডে ভাগ করে প্রতিটি খণ্ডের একটি নম্বর দেয়া হলো। যে নম্বরকে দাগ বলে।তাহলে সহজ কথায় বলা যায় কিছু দাগ নিয়ে একটি মৌজা গঠিত হয়। মৌজাকে ভূমি জরিপের একক বলা হয়।
Recent posts

খতিয়ান নম্বর

রসুলপুর গ্রামের সম্পূর্ণ জমিকে অনেক খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত করা হলো। প্রতিটি জমির খন্ডেরই মালিক আছে। কেউ হয়ত একটি জমির খণ্ডের মালিক, কেউ হয়ত অনেকগুলো খণ্ডের। জমির এই মালিকানার সঠিক হিসাব রাখার জন্য তাহলে একটি একাউন্ট নম্বর দরকার। ঠিক যেমন ব্যাংক একাউন্টের মতো। কোন একাউন্টে কত টাকা, কোন একাউন্টের কে মালিক, কত টাকা জমা করা হলো, কত টাকা উত্তোলন করা হল এসব ব্যাংক একাউন্ট হতে সহজেই জানা যায়। ঠিক তেমনই জমির হিসাবের জন্য যে একাউন্ট নম্বর দেয়া হয় তাকে খতিয়ান নম্বর বলা হয়। অর্থাৎ, জমির যে একাউন্ট নম্বর হতে জমির মালিক, জমির দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, জমির শ্রেণী, জমির মালিকের কতটুকু জমি প্রাপ্য ইত্যাদি জানা যায় তাকে খতিয়ান নম্বর বা খতিয়ান বলে বলে। একটি খতিয়ান নম্বরের মধ্যে একজন মালিক থাকতে পারে আবার একাধিক মালিকও থাকতে পারে। একটি খতিয়ানে এক বা একাধিক দাগ থাকতে পারে। একটি খতিয়ান নম্বরের মালিকের এক খণ্ড জমি (একটি দাগ নম্বর) থাকতে পারে আবার একাধিক খণ্ডও (দাগ নম্বর) থাকতে পারে, ঠিক তেমনি একজন মালিকের একই মৌজায় একটি খতিয়ান থাকতে পারে আবার একাধিক খতিয়ানও থাকতে পারে। খতিয়ান কে স্বত্বলিপি বা রেকর্ড অব রাইটস ...

সাবেক খতিয়ান ও হাল খতিয়ান

টাকার হিসাব রাখার জন্য ব্যাংকে যেমন একটি একাউন্ট নম্বর থাকে ঠিক তেমনি জমিরও একটি একাউন্ট নম্বর থাকে। একে খতিয়ান নম্বর বলে। একটি জরিপে কোন একটি দাগ এক বা একাধিক একাউন্টে (খতিয়ানে) অন্তর্ভুক্ত থাকে। পরবর্তী জরিপে সেই দাগটি অন্য একটি নতুন একাউন্টে (খতিয়ানে) অন্তর্ভুক্ত হয়। এক্ষেত্রে, পূর্বের একাউন্ট নম্বরকে সাবেক খতিয়ান এবং বর্তমান একাউন্ট নম্বরকে হাল খতিয়ান বলে। একটু জটিল মনে হচ্ছে। ধরি, এসএ রেকর্ডে মোঃ রহিম উদ্দিন এর একটি একাউন্ট (খতিয়ান নম্বর) ছিল যার নম্বর ২০১। এই একাউন্টে ৬৭, ১০৩ ও ৩০৪ এই তিনটি জমির খণ্ড (দাগ নম্বর) ছিল। তিনি এক সময় তার মালিকানার এই তিনটি দাগের জমি বিক্রি করে দেন। ৬৭ ও ১০৩ দাগের জমি বিক্রি করেন জামাল মিয়ার নিকট এবং ৩০৪ দাগের সকল জমি বিক্রি করেন হোসেন মিয়ার নিকট। পরবর্তীতে বিআরএস রেকর্ডে এসএ ৬৭ এবং ১০৩ দাগটির নতুন পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) ১০৫ ও ৪০৫ হয়। তখন জামাল মিয়ার নামে ৩০৮ নম্বর একাউন্ট (খতিয়ান) খোলা হয় এবং সেই একাউন্টে বিআরএস ১০৫ ও ৪০৫ দাগের জমি অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে ৩০৮ হলো হাল খতিয়ান এবং ২০১ হলো সাবেক খতিয়ান। আবার, এসএ ৩০৪ দাগটি বিআরএস রেকর্ডে নতুন পরি...

সাবেক দাগ ও হাল দাগ

জরিপের প্রধান কাজ হলো একটি মৌজার মৌজা ম্যাপ তৈরি করা। পূর্বেই বলা হয়েছে মৌজা ম্যাপে অসংখ্য ভূমি খণ্ড আঁকা থাকে এবং এসব ভূমি খন্ডের একটি দাগ নম্বর দেয়া হয়। সাধারণত একটি জরিপের অনেক বছর পর অপর একটি জরিপ পরিচালিত হয়। এত বছরের ব্যবধানে এবং জমির মালিকানা বদলের কারণে অথবা অন্যান্য কারণে জমির খণ্ড বা দাগসমূহের আকার/আকৃতি বা জমির পরিমাণ পরিবর্তিত হয়; আবার কখনও আকার/আকৃতি অপরিবর্তিত থেকে যায়। কখনও কখনও দেখা যায় যে পূর্ববর্তী জরিপের একটি বড় খন্ডের জমি (দাগ) পরবর্তী জরিপে ভেঙ্গে একাধিক খন্ডে (দাগে) পরিণত হয়। তখন নতুন জরিপে এই নতুন জমির খণ্ডগুলোকে চেনার জন্য পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) দেয়া হয়। ধরি, নেত্রকোণা জেলায় ১৯৬০-১৯৬২ সালে পরিচালিত এসএ জরিপে সাতপাই মৌজার একটি দাগ নম্বর ছিল ১০৩ এবং সেই দাগে জমির পরিমাণ ছিল ৮০ শতাংশ। ১৯৮০-১৯৮২ সালে নেত্রকোণা জেলায় পরিচালিত বিআরএস জরিপে সাতপাই মৌজার ১০৩ দাগটি ভেঙ্গে ৩টি খন্ডে পরিণত হয়েছে। এই তিনটি খণ্ডকে চেনার জন্য ২০৪, ২০৫ ও ২০৬ পরিচিতি নম্বর (দাগ নম্বর) দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, বিআরএস ২০৪, ২০৫ ও ২০৬ দাগ তিনটি এসএ ১০৩ দাগ হতে এসেছে। এক্ষেত্রে বিআরএস...

পর্চা

অনেকেই আমরা খতিয়ান বলতে পর্চা শব্দটি ব্যবহার করি। যদিও খতিয়ান এবং পর্চার বিষয়বস্তু একই কিন্তু এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কোন জরিপ যখন সম্পন্ন হয় তখন চূড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশিত হওয়ার পর মালিকানার বিবরণ সম্বলিত বিবরণী হল খতিয়ান। কিন্তু জরিপের প্রাথমিক পর্ায়ে জমির মালিককে যে খসড়া মালিকানার বিবরণী দেয়া হয় তাকে পর্চা বলে।

এস.এ. জরিপ (State Acquisition Survey)

১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিপ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় এরং রায়েতের সাথে সরকারের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে জমিদারদের প্রদেয় ক্ষতিপুরণ নির্ধারন এবং রায়তের খাজনা নির্ধারনের জন্য এই জরিপ ছিল। জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।

আর.এস. জরিপ (Revisional Survey)

সি. এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার বহু বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমি, মলিক এবং দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। এসএ জরিপে খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেননি বিধায় এসএ রেকর্ডে অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে যায়। এসকল ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুরনায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নেয়। এই জরিপকে আরএস জরিপ বলে। এ জরিপের খতিয়ানকে আরেএস খতিয়ান বলে।